১২৫’তম জন্মবার্ষিকীতে নেতাজী সুভাষের মৃত্যু সংক্রান্ত আলোচনা সমীচিন কিনা জানিনা। কিন্তু বর্তমানে সারা ভারত এই খবরেই আলোড়িত। তাঁর মৃত্যু রহস্য নিয়ে যে কটি তত্ত্ব বিরাজমান, তা সম্পর্কে বর্তমানে সকলেই অবহিত। এর মধ্যে একটি হল ভগবানজী (ওরফে গুমনামী বাবা তত্ত্ব)। এই তত্ত্বটি এই কথাই বলে যে তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু তো হয়েই নি, এমনকি রাশিয়াতেও তাঁর মৃত্যু হয় নি। তিনি স্বশরীরে ভারতে আগমন করেন এবং উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেন। ১৯৫০ সালে ভারতে আগমনের পরে প্রথমে মৈনপুরী, তারপর লক্ষ্ণৌ, নিমসার, অযোধ্যা, বস্তি, আবার অযোধ্যা এবং শেষে ফৈজাবাদে বসবাস করেন। ১৯৮৫ সালে ফৈজাবাদে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ভারতে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি ভগবানজী নামেই পরিচিত হন। তাঁর মৃত্যুর পর সংবাদপত্রের দৌলতে তাঁকে “গুমনামী বাবা” বলে অভিহিত করা শুরু হয়। কারণ জনগণের কাছে তিনি পর্দার আড়ালে মৌণ থাকতেন।
তাঁর মৃত্যুর পর “গুমনামী বাবা” নামটি কাগজে দেখি এবং সন্দেহ করা হয় তিনিই নাকি নেতাজী। আমার বয়স তখন অনেক কম ছিল। যেমনটি পড়ানো হয়েছিল যে নেতাজী প্লেন দুর্ঘটনায় মৃত। তলিয়ে দেখার যোগ্যতা অর্জন করিনি, তাই গুমনামী বাবা তত্ত্ব বিশ্বাস করিনি।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যতসংখ্যক মানুষজন বিশ্বাস করেন যে গুমনামী বাবা তত্ত্বটি সত্য, আমি তাদের দলেই পড়ি। তার প্রভূত কারণ আছে। প্রধান কারণ চন্দ্রচূড় ঘোষ এবং অনূজ ধরের নিরলশ গবেষণা। তারা প্রমান করে দিয়েছেন যে নেতাজী বেঁচে ছিলেন। সরকারের সে কথা মেনে নিতে বেশি দেরি নেই এ আমার বিশ্বাস।
যারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান, তারা অবশ্যই চন্দ্রচূড় ও অনূজ বাবুর “Conundrum” বইটি পড়ুন। সব উত্তর পেয়ে যাবেন। যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে সরাসরি তাদের করতে পারেন। আমি গবেষণা করিনি। আমি নগন্য তুচ্ছ অনুসারি মাত্র। এই প্রসঙ্গে বর্তমানের চর্চা জনগণের মধ্যে বিপুল সারা ফেলেছে। তবু যারা এখনো এই বিষয়বস্তুর অন্তরালে রয়েছেন,তাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেবার উদ্দেশ্যেই আমার এই লেখা।
উৎসাহবশতঃ আমি ফৈজাবাদে গিয়ে যেখানে নেতাজীর শেষ জীবন কেটেছে, সেই “রামভবনে” গিয়েছি। শক্তি সিং ঠাকুর মহাশয় – যাঁর বাড়িতে ভগবানজী শেষ আড়াই বছর ছিলেন, তার সাক্ষাৎকার নিয়েছি। ‘গুপ্তার ঘাট’- যেখানে তাকে দাহ করা হয়েছিল, তা প্রত্যক্ষ করেছি। এখানে সামান্য কয়েকটি ছবি মাধ্যমে তা তুলে ধরলাম। আরো বহু তথ্য আমার কাছে বর্তমান। ছবির স্বত্ব – লেখক স্বয়ং
রামভবনের মালিক শক্তি সিং মহাশয়। কথোপকথন চলাকালীন আমারই তোলা ছবি। তিনি যা বলেছেন, হুবহু তাঁর কথাই তুলে ধরলাম। “১৯৮২সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ জনৈক Dr.R P Mishra এসে বলেন একজন ভাড়া থাকবেন। প্রচুর মালপত্তর, পুঁথি, আসবাব আসতে লাগে। তিন চার মাস বাদে এপ্রিল-মে মাস নাগাদ দেখি একজনকেহুইল চেয়ারে করে আনা হল। এরপর বহু জল গড়িয়েছে। অবশেষে ১৬’ই সেপ্টেম্বর ১৯৮৫ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। কলকাতায় খবর পাঠানো হয়। তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনীর সহযোগীরা বছরে দুবার এখানে আসতেন। ২৩’শে জানুয়ারী এবং দূর্গাপূজা। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেদিন কেউই এলেন না। দুদিন পর ১৮’ই সেপ্টেম্বর গুপ্তার ঘাটে তাকে দাহ করা হয়। এরপর ডিসেম্বর মাসে নেতাজীর ভাইঝি “ললিতা বোস” সেখানে যান।
মালপত্তর দেখে তিনি সনাক্ত করেন ইনিই তাঁর কাকা নেতাজী। এরপর ইতিহাসের জল অন্যদিকে গড়াতে শুরু করে।
রামভবনের মালিক শক্তি সিং মহাশয়। কথোপকথন চলাকালীন আমারই তোলা ছবি। তিনি যা বলেছেন,
হুবহু তাঁর কথাই তুলে ধরলাম। “১৯৮২সালের নভেম্বর-
ডিসেম্বর নাগাদ জনৈক Dr.R P Mishra এসে বলেন একজন
ভাড়া থাকবেন। প্রচুর মালপত্তর, পুঁথি, আসবাব আসতে লাগে।
তিন চার মাস বাদে এপ্রিল-মে মাস নাগাদ দেখি একজনকে
হুইল চেয়ারে করে আনা হল। এরপর বহু জল গড়িয়েছে। অবশেষে
১৬’ই সেপ্টেম্বর ১৯৮৫ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। কলকাতায় খবর পাঠানো হয়। তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনীর সহযোগীরা বছরে
দুবার এখানে আসতেন। ২৩’শে জানুয়ারী এবং দূর্গাপূজা। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেদিন কেউই এলেন না। দুদিন পর ১৮’ই
সেপ্টেম্বর গুপ্তার ঘাটে তাকে দাহ করা হয়। এরপর ডিসেম্বর মাসে নেতাজীর ভাইঝি “ললিতা বোস” সেখানে যান।
মালপত্তর দেখে তিনি সনাক্ত করেন ইনিই তাঁর কাকা নেতাজী। এরপর ইতিহাসের জল অন্যদিকে গড়াতে শুরু করে।
সুভাষ চন্দ্র বোস রাষ্ট্রীয় বিচার কেন্দ্রঃ- এর প্রধান হলেন শক্তি সিং
যার কথা আগেই বলেছি। এই ঘরটিতেই নেতাজী জীবনের শেষ আড়াই বছর ছিলেন। এখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
গুপ্তার ঘাটে নেতাজীর শেষকৃত্যস্থল। এখানে এক বয়স্ক মানুষের
সাথে পরিচয় হয় যিনি এই দাহকার্য দেখেছিলেন। এই ঘাটের
সামান্য মালি ছিলেন তিনি। কিন্তু গুণাক্ষরেও জানতে পারেন নি
সুভাষ চন্দ্র কে দাহ করা হচ্ছে। আরো আশ্চর্য হল, আমাদের
মতো পণ্ডিতরা তর্ক করলেও ওখানকার মানুষরা প্রশ্নাতীতভাবে
মানেন যে এটি সুভাষ বোসের দাহ স্থল। এমনকি ভগবানজী
শব্দটাও তারা ব্যবহার করেন না। সরাসরি সুভাষ বোস কথাটিই
বলেন।