যোগাচার্য্য শ্রীযুক্ত শৈলেন চক্রবর্তী। আমি তাঁকে কাকাবাবু বলেই ডাকি। প্রথম প্রথম শৈলেনবাবু বলেই ডাকতাম। বছরখানেক পর একটা মৃদু ধমক খেলাম- ‘’আচ্ছা এটা কী জিনিস সন্দীপ ? শৈলেনবাবু শৈলেনবাবু করে ডাকো কেন আমাকে? আমি তোমার বাবার বয়সী। কেউ আমাকে দাদু বলে , কেউ বলে বাবা,
কেউ বলে কাকা। তোমার থেকে এটা আশা করি না‘’। আমি ক্ষমা চাইলাম। বাবার চেয়ে সামান্য ছোট তিনি। মনে মনে ঠিক করলাম কাকাবাবু বলেই ডাকব। প্রথম ডাকে একটু অস্বস্থি হচ্ছিল বটে । তিনি দেখলাম বেশ খুশিই হলেন |
তাঁর সাথে আমার প্রথম পরিচয় বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। পাহাড় স্থলির কৈবল্যধামে শ্রী কৈবল্য নামের বিরাট আশ্রম। প্রায় ১০০ সিড়ির ধাপ পেরিয়ে সাইকেলটা কাঁধে করে তুলে সেখানে হাজির হয়ে দেখি এই আশি বছরের যুবক দাঁড়িয়ে । ততক্ষনে খবর হয়ে গেছে যে সুদূর কলকাতা থেকে একজন সাইকেল চালিয়ে
চট্টগ্রাম এসেছে । তিনিও আমার সাথে দেখা করতে উৎসুক। সাদা গেঞ্জি পরিহিত টাক মাথার এক বৃদ্ধ দাঁড়িয়ে আছে । আশ্রমের এক ব্রম্ভচারী আমাকে দেখিয়ে বললেন এই যে ইনি এসেছেন । প্রথম দর্শনে তিনি আমার মন জয় করে ফেললেন । যে স্মিত হাসি দিয়ে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরেছেন মনে হল তিনি আমার অনেক দিনের চেনা । আরো শিখলাম যে এইভাবেই মানুষকে আপন করতে হয়।
তিনি একাধারে অনেক কিছু, তবে তাঁর পরিব্রাজক স্বত্যা নিয়েই আলোচনা করব। তিনি পায়ে হেঁটে বহু স্থান ভ্রমন করেছেন । সেই সংক্রান্ত তাঁর বই ‘’তীর্থ প্রেম ‘’ আমাকে মুগ্ধ করেছে , সম্প্রতি তাঁর একটি আত্মজীবনী মূলক বই বেরিয়েছে । তাঁর সেই সরল গ্রাম্য বাল্যকাল এবং মধ্য জীবন পড়ে আমি মুগ্ধ । তাঁর
জীবনের বিভিন্ন কথা যেন এক একটি অধ্যায় । সেগুলকে ধাপে ধাপে বিভিন্ন পর্বে এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
পরবর্তী পর্ব আসছে…।।